| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান ‘ইসলামে নববর্ষ পালন করার রীতি নেই’


‘ইসলামে নববর্ষ পালন করার রীতি নেই’


রহমত ডেস্ক     08 April, 2022     08:02 PM    


ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, পহেলা বৈশাখ সমাগত। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলা বর্ষবরণের নামে আমাদের অনেকেই বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের পর মদীনায় গিয়ে দুটি উৎসব বন্ধ করেছিলেন। একটি হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন উদযাপন বা "নওরোজ"। অপরটি ছিল "মিহিরজান"। এ উৎসব দুটির বিপরীতে চালু হয় মুসলমানদের দুই ঈদ। কারণ, নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন পালন করার রীতি ইসলামে নেই। এটা পারস্যের অগ্নিপূজকদের অনুকরণ। আজ (৮ এপ্রিল) শুক্রবার ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেন, হাদীস শরীফে এসেছে “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদেরই দলভুক্ত।” তাই যে কোন নওরোজ চাই সেটা থার্টি ফাস্ট নাইট হোক কিংবা পহেলা বৈশাখ, তা পালন করা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই আসুন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় বর্ষবরণের নামে সব ধরনের বেহায়াপনা ও গোনাহের কাজ পরিত্যাগ করি। শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় নববর্ষের দিবস-রজনী অতিবাহিত করি। একটি বছরের বিদায়লগ্নে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করি, বছর তো শেষ, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যে মহান উদ্দেশ্যে (তাঁর ইবাদত-বন্দেগির জন্য) আমাকে এই দুনিয়ায় পাঠালেন, সে পথে কতটুকু হেটেছি? সে পথে আমার প্রাপ্তি কতটুকু? হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, হিসাব চাওয়ার আগে নিজের হিসাব করে নাও, তোমার কাজ পরিমাপ করার আগে নিজেই নিজের কাজের পরিমাপ করে নাও। (তিরমিজি)। রমজানের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা যাবতীয় ভোগবিলাস, হিংসা-বিদ্বেষ ও সংঘাত পরিহার করে জীবনের সর্বস্তরে পরিমিতিবোধ, গোনাহ বর্জন এবং ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের মাধ্যমে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন। আমীন।

তিনি আরো বলেন, রমজান মাস তাকওয়া অর্জন ও অনুশীলনের মাস। তাকওয়ার গুণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। কারণ মুত্তাকিরাই আল্লাহ তায়ালার কাছে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানের অধিকারী হবে সে, যে সর্বাধিক পরহেযগার (মুত্তাকি)’ সূরা হুজরাত, আয়াত নং-১৩। এই মাস গোনাহের পঙ্কিলতায় নিমগ্ন আত্মার পরিশোধনের মাস। আমলের দুর্বল চাকাকে সবল করার মাস। রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের বারিধারায় সিক্ত হওয়ার মাস। এই মাসকে আল্লাহ তায়ালা খুব বেশি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য অর্জনের ভরা বসন্ত বানিয়েছেন। এ মাস থেকেই মুমিন সামনের দিনগুলোর ঈমানি প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং আখেরাতের পাথেয় সঞ্চয় করে। এই মাসের প্রতিটা মুহূর্ত সীমাহীন কল্যাণ ও বরকত দ্বারা পরিপূর্ণ। কারণ, এই মাস আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য অনেক বড় নেয়ামত ও গনীমত স্বরূপ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রমজান মাস মুমিনের জন্য গনীমত এবং মুনাফেকের জন্য ক্ষতির কারণ। (মুসনাদে আহমদ ২/৩৩০)। এই মাস আখেরাতের ব্যবসার মৌসুম। যে ব্যবসার মাধ্যমে মানুষ আখেরাতের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে। যে ব্যবসার মূল লক্ষ্য হল আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাতুন নাঈম। যে ব্যবসায় ব্যর্থ হলে অনন্তকালের জন্য আজাব ও গজবে ভুগতে হবে। কোরআন নাযিলের এই মাসে বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করুন। আন্তরিক প্রশান্তি মিলবে এবং ডিপ্রেশনে ভুগতে হবে না।