| |
               

মূল পাতা সারাদেশ মুজিবনগরে ভাস্কর্যের নিরাপত্তায় নানা উদ্যোগ


মুজিবনগরে ভাস্কর্যের নিরাপত্তায় নানা উদ্যোগ


মেহেরপুর প্রতিনিধি     22 December, 2020     10:47 AM    


স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য‍ নিয়ে বিভিন্ন রকম আলোচনার-সমালোচনার মধ্যে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেট এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য রাতের আঁধারে কে বা কারা ভেঙে ফেলে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। করোনার প্রথম থেকেই মুজিবনগর কমপ্লেক্স বন্ধ ছিলো তবে সারা দেশের পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই স্মৃতি কমপ্লেক্সও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

এসময় আইনশৃংখলা রক্ষার্থে ও পর্যটকদের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে পর্যটন পুলিশসহ আইনশৃংখলাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ছিলো। উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর এসকল আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে ১৩টি সিসিটিভ ক্যামেরা।

ক্যামেরাগুলোর ভাস্কর্য ও সারাদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীসহ মুজিবনগর কমপ্লেক্সে অবস্থানরত প্রত্যেককে পর্যবেক্ষনের মধ্যে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন।

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন‍্য নেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ। বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী, স্বাধীনতার সূতিকাগারের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৮ সালে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সাল থেকে তিন ধাপে শত কোটি টাকা ব‍্যয়ে র্নিমাণ করা হয় মুজিবনগর কমপ্লেক্স। শেষ ধাপে ২০০৫-২০১১ সালে সেখানে নির্মিত হয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানা ভাস্কর্য।

বর্তমানে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের ভিতরে ও বাইরের দিকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, তৎকালীন সরকারের শপথ, ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্থানীদের আত্মসমর্পণের ভাস্কর্য‍সহ মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ৬০০টি ছোট বড় ভাস্কর্য রয়েছে। মুজিবনগর কমপ্লেক্সের এসকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ সকল ধরনের নিরাপত্তার জন‍্য বতর্মান সময়ে সিসিটিভি স্থাপন করেছে গণপূর্ত বিভাগ। সেই সাথে মেরামত করা হয়েছে বিকল লাইট পোস্টগুলি।

ঐতিহাসিক এই মুজিবনগরে ঝিনাইদহ থেকে বেড়াতে আসা অ্যাডভোকেট নাসির বিশ্বাস বলেন, সারা দেশেই বড় বড় শহরগুলোতে সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকাতে অনেক অপরাধ কমেছে। যেহেতু কুষ্টিয়াতে জাতির জনকের ভাস্কর্য ভাঙার মতো ঘটনা ঘটেছে তাই ঐতিহাসিক স্থাপনা মুজিবনগর কমপ্লেক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক‍্যামেরা স্থাপন করায় নিরাপত্তা মজবুত হয়েছে। একই মন্তব্য করেছেন নাটোর থেকে ঘুরতে আসা শাহীন রেজা।

মুজিবনগর কমপ্লেক্স চত্বরে ঝাল-মুড়ি বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, এখানে অনেক মানুষ ঘুরতে আসে বিভিন্ন এলাকা থেকে। ঘোরার সময় তারা ভাস্কর্যের সাথে ছবি ওঠানোর
জন‍্য খুব কাছে চলে যায়। তবে যখন থেকে ক্যামেরা লাগাচ্ছে, তখন থেকেই সকলে ওগুলো থেকে দূরে দাঁড়িয়েই ছবি তোলে।

মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার জানান, ইতোপূর্বেও নিরাপত্তা ছিলো শুধুই স্মৃতি কমপ্লেক্সে। কিছুদিন আগে কুষ্টিয়ায় নির্মাধীন ভাস্কর্য ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় মুজিবনগর কমপ্লেক্সের মধ্যে থাকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য রক্ষার্থে আমাদের বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ বিভাগ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, আনসার বাহিনীসহ সাদা পোশাকের আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় কাজ করছে। বতর্মানে সশস্ত্র আনছার সদস্যরা পালাক্রমে দিন রাত দায়িত্ব পালন করছেন। গনপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ভাস্কর্যসহ মুজিবনগর কমপ্লেক্সের সকল কিছুর নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগতভাবে নিশ্চয়তা থাকল।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল জানান, উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় স্মৃতি কমপ্লেক্সের চারপাশে ১৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। কমপ্লেক্সের লাইট মেরামত হয়েছে। বাউন্ডারিরগুলো এ সপ্তাহের মধ্যেই সংস্কার হবে। লাইট পোস্টগুলো মেরামত কাজ শেষ হয়ে যাবে শিগগিরই।
-জেড


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: