| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ


জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ


রহমত ডেস্ক     07 August, 2022     10:37 PM    


জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর।

আজ (৭ আগস্ট) রবিবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। এতে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের মাধ্যমে ভোটারবিহীন সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের সরকার নয় বলে জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। এজন্য স্বেচ্ছাচারি কায়দায় মধ্যরাতে দেশের ইতিহাসে জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি করে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয়ের কথা বললেও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে। তাহলে ৫০% দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার স্বার্থে? বিপিসি টানা ৭ বছরে ৪৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এই ৪৩ হাজার কোটি টাকা কোথায়? এর হিসেব জনগণের কাছে দিতে হবে।

দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপাক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও সহকারি মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি নূরুল করীম আকরাম, উত্তর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ জয়েন্ট সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম, যুবনেতা মুহাম্মদ ইলিয়াস হাসান, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী শেখ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সার্জেন্ট অব. আমিনুল ইসলাম, সাব্বির আহমদ ও আহসান ফয়েজী প্রমুখ। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মুফতী ফয়জুল করীম ভোলায় প্রতিবাদ মিছিলে হামলার নিন্দা করে বলেন, প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ কোন যুক্তিতে গুলি চালিয়ে ২জনকে হত্যা করেছে, এর জবাব দিতে হবে। তিনি বলেন, বার বার তেলের দাম বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধি করলেও জনগণের সামর্থ বৃদ্ধি করা হয়নি। এভাবে তেলের দামবৃদ্ধির ফলে কৃষকের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার জনগণের সেবার মানসিকতা বাদ দিয়ে সর্বক্ষেত্রে ব্যবসায়ি মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে।

মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, সরকারের অবস্থাদৃষ্টে মনে সরকার আইসিইউতে আছে। তারপরও সরকার জনগণকে শোষণের মানসিকতা পরিহার করতে পারেনি। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। জনগণ ঘুরে দাড়ালে আখের রক্ষা হবে না। অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশে তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনগণকে হতাশ করেছে। গণবিরোধী সরকারকে ঐক্যবদ্ধভাবে পতন ঘটাতে হবে। মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, সরকার মুমুর্ষ ও অন্তিম অবস্থায়ও সত্য কথা বলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী এক সপ্তাহ আগে বলেছিলেন, বাংলাদেশকে পেট্টোল-অকটেন কিনতে হয় না। বাংলাদেশেই উৎপাদন হয়, আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার পরই পেট্রোল, অকটেনের দাম বাড়ানো হলো। দেশের নির্বাহী প্রধান হয়ে কিভাবে মিথ্যা কথা বলে, ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর কথা আর কেউ বিশ্বাস করবে না। তিনি সরকারকে একটি নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান।

মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। সবাই দুর্নীতিবাজ, চোর ও ডাকাত সরকার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতা গ্রহণের সময় বিদেশি ঋণ ছিল ৭১২ কোটি ডলার। বর্তমানে তা দাড়িয়েছে ৯৩২৩ কোটি ডলারে। ঋণনির্ভর উন্নয়ন করে সরকার গণপ্রতারণা করছে। স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও বাংলাদেশের জ্বালানি নীতি পুরোপুরি আমদানি নির্ভর। বিদেশে টাকা পাচারের জন্যই সরকার আমদানিনীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে ৯ কোটির বেশি মানুষ গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল প্রেসক্লাব থেকে কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর রোডে গিয়ে দোয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।