| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘বিদ্বেষ প্রশমনে বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতির অবসান জরুরি’


‘বিদ্বেষ প্রশমনে বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতির অবসান জরুরি’


রহমত ডেস্ক     30 June, 2022     10:52 PM    


সাভারে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা এবং নড়াইলে কলেজ অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন মনে করে, সাম্প্রতিককালে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌনঃপুনিকভাবে ঘটে চলা শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা-বিদ্বেষেরই বহিঃপ্রকাশ। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, ভিন্নমত দমন, বহুত্ববাদ ও সহনশীলতা চর্চার অভাব দেশে একটি অসহিষ্ণু ও বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করছে। বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতির দরুন এ পরিস্থিতি এখন ভয়ঙ্কর ও অসহনীয় হয়ে উঠছে। এ কারণে অসহিষ্ণুতা, বিদ্বেষ প্রশমনে বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতির অবসান জরুরি।

আজ (৩০ জুন) বৃহস্পতিবার  এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আর্টিকেল নাইনটিন এ তথ্য জানায়। গত ২৫ জুন সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় প্রতিবাদ করায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে এক ছাত্র ওই শিক্ষককে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। দুই দিন পর শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অন্যদিকে, গত ১৮ জুন ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে পুলিশের উপস্থিতিতে লাঞ্ছিত করা হয়। তাকে জুতার মালা পরানো হয়। এর আগে গত ২২ মার্চ শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর সময় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কথিত অভিযোগে মুন্সিগঞ্জের বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা ও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে নিগৃহীত শিক্ষকদের সবাই ধর্মীয় পরিচয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী। তাদের লাঞ্ছনার ধরন পূর্বপরিকল্পিত ও পদ্ধতিগত নিপীড়নেরও ইঙ্গিত দেয়। সুতরাং একে আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। নিপীড়নের এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রাথমিক নীরবতা ও নিস্ক্রিয়তা দেশের সব শিক্ষক এবং বিভিন্ন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতাবোধ তৈরি করছে। চলমান বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতি এ বোধকে আরও তীব্রতর করেছে, যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণের পথে বড় প্রতিবন্ধক। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলমন্ত্রের সম্পূর্ণ বিরোধী। বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের সমান মর্যাদা ও বিচার পাওয়ার অধিকার দিয়েছে। পাশপাশি সংবিধান এই অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে দিয়েছে। তাই পদ্ধতিগত নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রতিটি ঘটনায় দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। এজন্য বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতিরও অবসান করতে হবে। শিক্ষক হত্যা ও লাঞ্ছনার সাম্প্রতিক দুটি ঘটনাসহ এ ধরনের সব ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানায় আর্টিকেল নাইনটিন।