| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান ‘শবে বরাতকে ঘিরে সমাজে দ্বিমুখী প্রান্তিকতা রয়েছে’


‘শবে বরাতকে ঘিরে সমাজে দ্বিমুখী প্রান্তিকতা রয়েছে’


রহমত ডেস্ক     11 March, 2022     07:19 PM    


মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, হিজরী বছরের গুরুত্বপূর্ণ মাস শাবান শুরু হয়েছে। মুমিনের কাঙ্খিত রমজান মাসের পূর্ববর্তী মাস এটি। ধর্মীয় বিবেচনায় এই মাসটি অনেক ফযীলতপূর্ণ। হাদীস শরীফে এ মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’বা শাবানের মধ্য রজনী বলা হয়েছে। আমরা যাকে ‘শবে বরাত’ বলি। এটি ফারসি শব্দ। শব মানে রাত, বারাআত মানে মুক্তি। শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত বহু হাদীসে এ রাতের ফযীলতের কথা বর্ণিত হয়েছে।  শবে বরাতকে ঘিরে আমাদের সমাজে রয়েছে দ্বিমুখী প্রান্তিকতা। আজ (১১ মার্চ) শুক্রবার ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির প্রতি রহমতের বিশেষ দৃষ্টি দেন। অতঃপর শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া সমগ্র সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৫৬৬৫)। হযরত আলী ইবনে আবি তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখ। কেননা, এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, আছে কি কোনো ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি কোনো রিযিকপ্রার্থী? আমি তাকে রিযিক দেব। আছে কি কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি? আমি তাকে বিপদ ও সমস্যা থেকে মুক্তি দেব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাদেরকে ডাকতে থাকেন। (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৩৮৮)। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতের ফযীলত সম্পর্কে একাধিক মারফু হাদীস ও আসারে সাহাবা বর্ণিত আছে। যা দ্বারা ওই রাতের ফযীলত ও মর্যাদা প্রমাণিত হয়।

খতীব  বলেন, শবে বরাতকে ঘিরে আমাদের সমাজে রয়েছে দ্বিমুখী প্রান্তিকতা। কেউ কেউ শবে বরাতের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করতে চান, যা একদমই অনুচিত। আশা করি তাদের জন্য উপরোক্ত হাদীসের বিবরণ যথেষ্ট হবে। আর কেউ কেউ এ রাতকে ঘিরে পালন করেন এমনসব রুসুম-রেওয়াজ, যা শরীয়ত বিবর্জিত এবং গুনাহের কাজ। শবে বরাত উপলক্ষে খিচুড়ি, হালুয়া-রুটি, পটকা ও আতসবাজি ফুটানো, দোকান-পাট, ঘর বাড়ি এমনকি মসজিদ আলোকসজ্জা করা, মেলার আয়োজন করা, কবরস্থান ও মাজারে ভীড় করা, কিশোর ও যুবকদের দলবেঁধে ঘোরাঘুরি করা, নারীদের মাজারে যাওয়া ইত্যাদির যে প্রচলন রয়েছে তা অত্যন্ত আপত্তিকর। এগুলোর কিছু কিছু তো সম্পূর্ণ হারাম এবং নাজায়েজ। আর কিছু কিছু তো এমন যা সাধারণ অবস্থায় বৈধ হলেও (যেমন হালুয়া-রুটি খাওয়া এবং খাওয়ানো) শবে বরাতের আমল মনে করা বিদআত। এগুলোতে সময় নষ্ট না করে যথাসম্ভব ইবাদত বন্দেগী করা চাই। বিশেষভাবে তওবা-ইস্তিগফার, দোয়া-কান্নাকাটি, সালাতুত তাসবীহ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত এবং নফল ইবাদতে মশগুল থাকা উচিত। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন।