| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান মহিমান্নিত মাস মাহে রমজান আসন্ন


মহিমান্নিত মাস মাহে রমজান আসন্ন


রহমত ডেস্ক     11 March, 2022     07:31 PM    


আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেছেন, মহিমান্নিত মাস মাহে রমজান আসন্ন। এ মাসেই পবিত্র কোরআন কারীম নাযিল হয়েছে। এ মাসের বহু ফযীলত রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নিকট রমজান উপস্থিত হয়েছে, এটি একটি বরকতময় মাস। তোমাদের উপরে আল্লাহ তায়ালা অত্র মাসের সওম ফরয করেছেন। এ মাস আগমনে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর আল্লাহর অবাধ্য শয়তানদের গলায় লোহার বেড়ী পরানো হয়। এ মাসে একটি রাত রয়েছে যা এক হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। (সুনানে নাসায়ী : ২১১০)। আজ (১১ মার্চ) শুক্রবার ঢাকার গুলিস্থান ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

খতিব বলেন, রমজানের বাকি মাত্র কিছু দিন! জীবনের যে কোন বিষয়ে সফলতা আনতে চাইলে, অথবা কোন বিষয়ে লক্ষ্য নির্ধারন করলে, তার প্রথম ধাপ হচ্ছে নিজের মন মানসিকতাকে স্থির করা। রমজান মাসের প্রস্তুতির জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মূলত তিন প্রকার কৌশলে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। প্রথমত নফল রোজার মাধ্যমে রমজানের ব্যবহারিক প্রস্তুতি গ্রহণ। দ্বিতীয়ত রমজানের বরকত হাসিলের জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া। তৃতীয়ত চারপাশের সকলকে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফিরাত সম্পর্কে সচেতন করা এবং তা অর্জনের জন্য উৎসাহিত করা, যাতে সকলে তা অর্জনের জন্য অগ্রসর হয়। রমজানের পূর্ববর্তী শাবান মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নফল রোজা রাখতেন।

তিনি বলেন, হযরত উসামা ইবনে যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ‘আমি একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি শাবান মাসের মত আপনাকে অন্যকোন মাসে রোজা রাখতে দেখি না (এর কারণ কী)।’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘রজব ও রমজানের মাঝে অবস্থিত এটি এমন এক মাস যাতে লোকেরা খুব মনোযোগ দেয় না। এটি এমন মাস যখন বান্দার আমল সারা জগতের অধিপতির সামনে হাজির করা হয় এবং আমি চাই আমার আমল এই অবস্থায় হাজির হোক যখন আমি রোজা পালনের মধ্যে থাকি।’ (সুনানে নাসায়ী : ২৩৫৯)।

তিনি আরো বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মাস সমূহের মধ্যে শা'বান মাসের সাওম পালন করা সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল। বরং তিনি শা'বান মাসকে (সাওম পালনসহ) রমজানের সাথে মিলিয়ে নিতেন। [ সুনানে আবু দাউদ : ২১০১, তালীকুর রাগীব ২/৮০] তবে শাবান মাসে তিনি কতদিন রোজা রাখতেন তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। কিন্তু এটি আমরা সাধারণভাবে ধারণা করে নিতে পারি, রমজান আসার পূর্বেই তিনি রোজা রাখার অনুশীলনের সূচনা করতেন। অবশ্য, পুরো মাস তিনি রোজা রাখতেন না।

মাওলানা রব্বানী বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের আগমন উপলক্ষে সবাইকে সচেতন ও উৎসাহ প্রদান করতেন। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে এর (রমজানের) কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল, সে প্রকৃতই বঞ্চিত হল।” (সুনানে নাসায়ী: ২১১০)। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদেরকে রমজানের কল্যাণ অর্জনের জন্য কিরূপ উৎসাহ প্রদান করছেন। আমরা আল্লাহর রাসূলের অনুকরণে এই তিন প্রক্রিয়ায় নিজেদের রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি।