| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান প্রত্যেক মানুষের নিকট তার নিজ মাতৃভাষা অতিশয় প্রিয়


প্রত্যেক মানুষের নিকট তার নিজ মাতৃভাষা অতিশয় প্রিয়


রহমত ডেস্ক     18 February, 2022     08:42 PM    


বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী বলেন, আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত নিদর্শন সমূহের মধ্যে ভাষা অন্যতম একটা নিদর্শন। কোরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও রং এর ভিন্নতা। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।’ (সূরা রূম-২২)। মাতৃভাষা মায়ের ভাষা। প্রত্যেক মানুষের নিকট তার নিজ মাতৃভাষা অতিশয় প্রিয়। আল্লাহর কাছে তার প্রতিটি বান্দাই যেমন সমান। সাধারণ দৃষ্টিতে মানুষে মানুষে যেমন কোনো বিভেদ নেই, ভাষার মর্যাদার ক্ষেত্রে ও তেমন কোনো ভেদাভেদ নেই। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের কাছেই তার মাতৃভাষার চেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন আর কোনো ভাষা নেই। আজ (১৭ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

পেশ ইমাম বলেন, মাতৃ জীবের অস্তিত্ব লাভের পর মায়ের রক্তে যে অস্তিত্বের ক্রমবিকাশ ঘটে এবং ভূমিষ্ঠ হবার পর মাতৃস্নেহে বেড়ে ওঠে অতঃপর ধীরে ধীরে মায়ের ভাষা শিখে আস্তে আস্তে মনের ভাব প্রকাশ করে। তাই মা মাতৃভাষা, আমাদের অস্তিত্বের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এটাকে অস্বীকার করা নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করারই নামান্তর। আল্লাহপাক প্রত্যেক মানুষকেই স্ব স্ব ভাব প্রকাশের ক্ষমতা দিয়েছেন। এই ভাবপ্রকাশের পদ্ধতি দুটি। প্রথমতঃ মুখের দ্বারা, দ্বিতীয়তঃ লিখনীর দ্বারা। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আ'লামীন যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে তাঁর রাসূল পাঠিয়েছেন। এসব সম্মানিত বার্তাবাহকগণ যাঁরা যে এলাকার জন্যে প্রেরিত হয়েছিলেন সেই এলাকার ভাষায় ছিল তাদের মাতৃভাষা। তারা তাদের মাতৃভাষায় কথা বলেছেন, দ্বীন প্রচার করেছেন এবং প্রেরিত কিতাবসমূহ আল্লাহ তায়ালা নবী-রাসুলদের নিকট মাতৃভাষায় অবতীর্ণ করেছেন। এই সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন "আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য। অতঃপর আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন যাকে চান এবং পথ দেখান যাকে চান। তিনি মহা সম্মানিত, প্রজ্ঞাময় (সূরা ইব্রাহীম -৪)।

তিনি বলেন, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত মানুষকে মাতৃভাষায় দ্বীনের পথে আহবান করা। যাতে করে মানুষ দ্বীনের কথা গুলো সহজে বুঝতে পারে। আর এটাও একটা হেকমত ও দাঈ ইলাল্লাহর গুণ যা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বর্ণনা করেছেন, "তুমি তোমার রবের পথে হেকমত ও সুন্দর উপদেশ এর মাধ্যমে আহবান করো এবং বিতর্ক করো পছন্দ যুক্ত পন্থায়" (সূরা নাহল -১২৫)। ইসলাম উদার দৃষ্টিভঙ্গি ধর্ম, যা মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনসহ পৃথিবীর সকল ভাষার প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করে। তাই আসুন আমরা আমাদের বাংলাভাষাকে সহি শুদ্ধভাবে বলা ও লেখার চর্চা করি এবং ভাষা আন্দোলনের মাস একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রূহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করছি। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।