| |
               

মূল পাতা সারাদেশ চাঁদপুরে নবজাতক বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করলেন মা!


প্রতীকী

চাঁদপুরে নবজাতক বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করলেন মা!


রহমত ডেস্ক     03 February, 2022     07:41 AM    


চাঁদপুরে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতক বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। জেলার মতলব উত্তর উপজেলার পালস্ এইড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি প্রকাশ পায় বৃহস্পতিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মতলব উত্তর এলাকার ছেংগার চর এলাকায়।

বুকের ধন হাতছাড়া হওয়ায় এখন পাগল প্রায় মা। সন্তানকে ফিরে পেতে সরকার ও বিত্তবান মানুষের সহায়তা চেয়েছেন তিনি। অসহায় এই মায়ের নাম তামান্না বেগম (২৮)।

জানা যায়, উপজেলার হানিরপাড় গ্রামের আলমের স্ত্রী তামান্না বেগম। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে না নেওয়ায় তারা ভাড়া বাসায় থাকেন। দুই সন্তানের জননী তামান্না বেগম।

তৃতীয় সন্তান প্রসবের সময় হয়ে এলে স্বামী টাকা-পয়সা জোগাড়ের জন্য বাড়ি থেকে চলে যান। এর মধ্যে তামান্না বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে তার মা ও স্বজনরা মিলে ছেংগারচর বাজারে অবস্থিত পালস এইড হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ২৬ জানুয়ারি ভর্তি করেন। ওই দিনই সিজার অপারেশনের মাধ্যমে একটি ফুটফুটে সন্তান জন্ম নেয়।

এদিকে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য তামান্না বেগমকে চাপ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাসপাতাল ও ওষুধ খরচের ব্যয় বহন করতে না পেরে ৫০ হাজার টাকায় বাধ্য হয়ে নাড়িছেঁড়া ধন বিক্রি করেন স্থানীয় এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে। অবশেষে হাসপাতালের ৪০ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করে নিজ বাড়ি ফেরার সুযোগ মেলে হতভাগ্য ওই মায়ের।

এ বিষয়ে অসহায় তামান্না বেগম জানান, হাসপাতালে অপারেশনের পরপরই টাকা চাওয়া হয়। আমি গরিব মানুষ এত টাকা দেব কোথা থেকে? আরেকজন আমাকে বিনামূল্যে রক্ত দিলেও হাসপাতালে রক্তের বিল দুই হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে অপারেশন ওষুধপত্র এবং আনুষঙ্গিক খরচ নিয়ে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। যখন হাসপাতালের বিল ও নিজের চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারছিলাম না তখনই সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই। হাসপাতালের এক কর্মকর্তার পরামর্শে ৫০ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করি।

হাসপাতালের মালিকদের একজন লিমন সরকার জানান, নবজাতক বিক্রির বিষয়ে আমরা অবগত নই। হাসপাতালে বিল যা আসছে তা দিতে হবে। কীভাবে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করবে সেটা তাদের বিষয়।

এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ বা আবেদন করেনি। তবে আমি খোঁজ নিচ্ছি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো আমরা।


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: চট্টগ্রাম চাঁদপুর মতলব উত্তর