| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থে সবকিছু করছে: গাজী আতাউর রহমান


শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থে সবকিছু করছে: গাজী আতাউর রহমান


রহমত নিউজ     05 July, 2024     10:52 PM    


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, বর্তমান ডামি সরকার ও সরকারের সকল মন্ত্রী-এমপিরাই দেশের জন্য ক্ষতিকারক। কাজেই এই অবৈধ সরকারকেই ক্ষমতাচ্যুত করে দেশপ্রেমিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থে সবকিছু করছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতকে সবকিছু উজার করে দিতে পেরেই আত্মতৃপ্ত ও খুশি। কিন্তু দেশের জন্য কিছু নিয়ে আসতে না পারা যে তার জন্য ব্যর্থতা তা বুঝতে পারছেন না। এই অথর্ব প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য অভিশাপ। এদেরকে এখনই বিদায় করে দেশপ্রেমিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের রেল করিডোরের স্বপ্ন পূরণ করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে এই সিদ্ধান্ত রুখে দেওয়া হবে। তাই চূড়ান্ত আন্দোলনের আগেই সরকারকে রেল করিডোরসহ ১০টি অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। না হয় সারাদেশে দল-মত নির্বিশেষে এ ব্যাপারে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চুক্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেল করিডোর। এটি দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দেশের জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে চুক্তি করা হয়েছে। তাই এসব চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

আজ (০৫ জুলাই) শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে ভারতের সাথে দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল এবং দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদল কাইয়ূম। সংগঠনের ঢাকা  জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফেজ এম হাছিবুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সুলতান আহমদ খান, অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান, আলহাজ্ব শাহীন আহমদ, মাওলানা ইলিয়াস হোসাইন, যুবনেতা মিরাজ হোসেন মঈন, ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহ মাহমুদসহ জেলা সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ভারতের রেল বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে চলতে দেয়া হবে না। একবার যদি পরীক্ষামূলকভাবে ভারতের রেল চলতে দেয়া হয় তা’ হলে এ রেল আর বন্ধ হবে না। ফলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌত্ব থাকবে না। ভারতের সাথে আমরা সুসম্পর্ক চাই কিন্ত তা’হতে হবে মর্যাদাপূণ সম্পর্ক। ভারতের স্বার্থে দেশবিরোধী কোনো চুক্তি এদেশের মানুষ মেনে নিবে না। স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল চলার করিডোর দেয়া যায় না। ভারতকে সন্তুষ্ট রাখতে হলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। প্রধানমন্ত্রীকে এদেশের জনগণ ক্ষমতায় বসায়নি। ক্ষমতায় বসিয়েছে ভারত। যারা ভারতের সাথে বার্গেনিং করে দেশ চালাতে পারবে না। তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। গাজী আতাউর রহমান বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের সাথে ১৩টি চুক্তি কথা বলা হেয়ছে। তিনি বলেন, বতমমান সরকারকে রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ বাহিনী ও সেনাবাহিনী। এজন্য এই দুই বাহিনীকে ভারত ট্রেনিং দিয়ে মগজ ধোলাই করার চুক্তি করা হয়েছে। ভারত আমাদেরকে কী ট্রেনিং দিবে?
কোটা প্রসঙ্গে বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে কোটাপ্রথা বাতিল করা হয়েছিলো ২০১৮ সালে। এখন বর্তমান আদালতের উপর ছেড়ে দিয়ে পুনরায় কোটাপ্রথা বহাল করে মেধাহীন প্রশাসন তৈরি করছে। আর এরাই দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অবশ্যই সম্মান করি। কিন্তু এর অর্থ এই নয়, যে তাদের নাতি-পুতিরাও এর দোহাই দিয়ে ৫৬ভাগ চাকুরি নিয়ে যাবে। আমরা কোটা চাই সর্বোচ্চ ১০ ভাগ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, বর্তমান সরকার জনগণ বর্জিত সরকার। দেশের প্রতি তাদের ন্যুনতম দায়বদ্ধতা থাকলে ভারতের সাথে অসম চুক্তি করতে পারে না। তিনি বলেণ, ১০ দফা দেশবিক্রির চুক্তি। প্রধানমন্ত্রী ইউরোপের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ইউরোপে বর্ডার নেই, কিন্তু ইউরোপে তো বিনা ভোটে সরকারও নির্বাচিত হয় না, দুর্নিিত হয় না, দুর্নীতিবাজদের রাষ্্রটীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিদেশে পাঠানো হয় না, দিনের ভোট রাতে হয় না। তাহলে আপনি এগলো করছেন কেন? ধান্দাবাজি ছেড়ে দিয়ে দেশ রক্ষায় কাজ করুন, না হলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণকে অভিশাপ থেকে বাচান। তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাখাত, অর্থনৈতিক খাত, ব্যাংকগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, সরকার ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিচ্ছে। গত মাসেও প্রধানমন্ত্রী ভারতে দুইবার সফর করেছেন। সেখানে তিনি ১০টি চুক্তি করেছেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের রেল যাবে। কিন্তু সেই রেলের ভেতর কী থাকবে তা বাংলাদেশ জানবে না। এতে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য থাকতে পারে। সেজন্য দেশের উপর দিয়ে অবৈধ রেল করিডোর আমরা মানি না। এই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে দেশের জনগণ আর এক মুহূর্ত ও ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাতায়াত শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে এটি পরীক্ষামূলক থাকবে না। তাই দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যদি ভারত এই রেল করিডোর ব্যবহার করা শুরু করে তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব থাকবে না। এখন যেমন বাংলাদেশের মানুষ সরকার গঠন করার ক্ষমতা হারিয়েছে, তখন বাংলাদেশের মানুষ সার্বভৌমত্ব হারাবে। এ জন্য বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের রেল চলতে দেওয়া
বিক্ষোভ সমাবেশশেষে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট, পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকি ঘুরে পুনরায় পল্টন মোড়ে এসে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মিছিলে ভারতের সাথে চুক্তি ও সরকারের দুর্নীতি নিয়ে নানা শ্লোগান দেন কর্মীরা।