| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ১০ লাখ শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন মাত্র ২ লাখ ৩৮ হাজার


১০ লাখ শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন মাত্র ২ লাখ ৩৮ হাজার


রহমত নিউজ ডেস্ক     15 November, 2023     07:44 AM    


আগামী শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের ৩ হাজার ১৮৮ প্রতিষ্ঠানে আসন শূন্য রয়েছে ১০ লাখ ৪ হাজার। কিন্তু এসব আসনে ভর্তির জন্য আবেদন পড়েছে মাত্র ২ লাখ ৩৮ হাজার।  সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও এসব প্রতিষ্ঠানে ৭ লাখ ৭৬ হাজার আবেদন শূন্য থাকবে। ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর কাছে শূন্য আসনের তথ্য চাওয়া হয়। সে আলোকেই ভর্তির জন্য আবেদন চাওয়া হয়। গত ২৪ অক্টোবর বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তি আবেদন করতে পারে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন থাকার পরও এত কম সংখ্যক আবেদনই দেশের বেসরকারি স্কুলের দৈন্যদশা প্রমাণ করে। তারা এটাও মনে করেন, হয়তো শিক্ষার্থীদের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রাপ্যতা না থাকার পরও স্কুল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কারণে অনেক কম সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলগুলো চলছে।

গত বছরের ভর্তির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮০৭টি শূন্য আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪১ জন শিক্ষার্থী। ফাঁকা রয়ে গেছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৬টি আসন। সেই হিসাবে বাকি ৭০ ভাগ আসন প্রার্থীর শিক্ষার্থী শূন্য ছিল। বেসরকারি কয়েকটি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০২১ সালে প্রথম বারের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। মাউশির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনলাইনে ভর্তির মাধ্যমে স্কুলের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা সহজ হচ্ছে। শিক্ষা প্রশাসনের কাছে প্রকৃত তথ্য আসছে। কোন স্কুলে কত শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। কোথায় আসন ফাঁকা থাকছে। সে আলোকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর নামি-দামি কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য স্কুলে আসনের বিপরীতে এখনো শিক্ষার্থী সংকট রয়েছে। অনেক স্কুলে নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে। আর জেলা পর্যায়ের পরিস্থিতি আরো খারাপ। অনেক স্কুলে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী পাবে হাতে গোনা। এসব প্রতিষ্ঠান বেশির ভাগই এমপিওভুক্ত। ভর্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে তাদের বিষয়ে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে। এবারও সারা দেশের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদন ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত প্রথম লটারির সমসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা নির্বাচন করতে হবে। পরে প্রয়োজন হলে লটারির মাধ্যমে দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক এবং ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জানান, আগামী ২৬ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে লটারির ফল প্রকাশ করা হবে।

সরকারি স্কুলে আবেদন চার গুণ : প্রতিষ্ঠানগুলো যে তথ্য মাউশিতে পাঠিয়েছে, সে অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা ১১ লাখ ২২ হাজার ৯৯টি। এর মধ্যে সরকারি স্কুলে শূন্য আসন ১ লাখ ১৮ হাজার ১০৬টি। আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার। সারা দেশের সরকারি ৬৫৮টি স্কুল এই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। এর মধ্যে ঢাকা শহরে প্রতিষ্ঠান ৪১টি। ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা। টেলিটকের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করা যাবে। ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ছয় বছরের বেশি। প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ৫৫ জন।

নীতিমালা অনুযায়ী, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ঐ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। ঢাকা মহানগরের সরকারি বিদ্যালয় সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর বা সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষ্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে ৫ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে ৮ হাজার টাকা। আর ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফিস ১০ হাজার টাকা। রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনঃভর্তি ফি নেওয়া যাবে না।