| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক উপমহাদেশ ‘ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আত্মার, কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়’


‘ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আত্মার, কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     28 August, 2023     11:23 AM    


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আত্মার, রক্তের ও ভাতৃত্বের। এই সম্পর্ক কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়। একসময় ভারতেরই অংশ ছিল এই বাংলাদেশ। ১৯৪৭ সালে ভারত যখন দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভাগ হলো তখন ভারত ও পাকিস্থান নামে দুইটি রাষ্ট্র গঠন হলো। পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামক আরেকটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তার অভিমত আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষের দেশ গঠনের। সেই লক্ষ্যেই আমরা বাংলাদেশের মানুষ কাজ করে যাচ্ছি। এই লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু সারাজীবন লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যেন এই আত্মিক সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পায়।

রবিবার (২৭ আগস্ট) কলকাতার রোটারি সদনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যু বার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘের সভাপতি শিশির বাজোরিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবী আবু নাসের প্রমুখ।

১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের মানুষ ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদানের বিষয়টি তুলে ধরে হানিফ বলেন, সে সময় ইন্দিরা গান্ধীর অবদানের কোনো তুলনা হয় না, এই ঋণ শোধ করার নয়। এই অবদান বারবার প্রমাণিত। তারা এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল, খাদ্য দিয়েছিল, প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সে সময় বিনা ভাড়ায় এই কলকাতায় ভ্রমণ করেছি। এই সহযোগিতা আর কোথাও পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, ইন্দিরা গান্ধীই বাংলাদেশের স্বপক্ষে জনমত তৈরি করার জন্য গোটা বিশ্বের কাছে আহ্বান করেছিলেন, সেটাও ভোলার নয়। ৭১’র যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল তাকে হত্যার মধ্যে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের অধীনে নিয়ে যাওয়া। তার অভিযোগ জিয়াউর রহমান আসলে মুক্তিযুদ্ধ ছিলেন না, আসলে উনি ছিলেন ছদ্দবেশী মুক্তিযোদ্ধা। তার কিছু কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়েই সেটা প্রমাণিত হয় যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে সংখ্যালঘু মানুষের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় যারা জড়িত ছিলেন, তারা ফের নাশকতা করার চেষ্টা করছে। আমাদের সরকারও তা দমন করার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, একাত্তরের যুদ্ধে ভারতে-বাংলাদেশের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল সেই সম্পর্কের ওপরেও আঘাত হানার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার আসার পর সেই সম্পর্কে ফের অগ্রগতি আসে।

দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার যে আন্তরিকতা বিশেষ করে, শেখ হাসিনার প্রতি তার যে মানসিকতা, আন্তরিকতা এটা আমাদের জাতিকে কৃতজ্ঞভাবে আবদ্ধ করেছে। আমরা চাই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে দুই দেশ এগিয়ে যাক। আমরা চাই দুই দেশের রক্তের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হোক। আমরা উভয় দেশ একে অপরের পরিপূরক। আমরা চাই সেই সম্পর্ক অটুট থাকুক। কারণ দুই দেশেই আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাই সেই সম্পর্ক কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়।

কয়েকদিন আগেই চাঁদে চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণ নিয়ে ভারতের প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, এটা এই উপমহাদেশের কাছে খুবই গৌরবের বিষয়। ভারতের বিজ্ঞানীরা তাদের দক্ষতা দেখিয়ে দিয়েছে। এখানে নরেন্দ্র মোদীরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। তিনি যে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কতটা সহায়তা ও উজ্জীবিত করেন সেটা দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার সফর শেষ করে ভারতে নেমেই বেঙ্গালুরুতে ইসরোর সদর দপ্তরে গিয়েছেন, সেটাও পত্রিকায় পড়লাম। তার অভিমত, এরকম একজন দক্ষ আন্তরিক প্রধানমন্ত্রী থাকলে সেই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অবশ্যম্ভাবি। গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারত একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ যত বেশি শক্তিশালী হবে, বড় হবে, পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে তাদের সাথে আমরাও এগিয়ে যেতে পারবো।