| |
               

মূল পাতা আরো সোশ্যাল মিডিয়া ‘মাকবুল প্রতিষ্ঠানের যোগ্য মুহতামিম’


‘মাকবুল প্রতিষ্ঠানের যোগ্য মুহতামিম’


ড. আফম খালিদ হোসেন     07 July, 2022     11:35 PM    


আজ ৭ জুলাই'২২ অনুষ্টিত মজলিশে শুরার বৈঠকে আন্তর্জাতিক স্কলার জনাব মাওলানা হাফেয ওবায়দুল্লাহ হামযাহ হাফিজাহুল্লাহকে সর্বসম্মতিক্রমে দেশের অন্যতম প্রাচীন মাদরাসা পটিয়া জামিয়ার মুহতামিম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই এবং উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি আল্লাহ তায়ালার দরবারে। মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা কুতবে আলম হযরত মুফতি আযিযুল হক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা হাজী ইউনুস রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা হারুন ইসলামাবাদী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা মুফতি আবদুল হালিম বোখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির যোগ্য উত্তরসূরী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ হাফিজাহুল্লাহ।

আমাদের হাদিসের ওস্তাদ হযরত আল্লামা সুলতান যওক নদভী হাফিজাহুল্লাহকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক, আমাদের আরেকজন সম্মানিত উস্তাদ হযরত মাওলানা আমিনুল হক হাফিজাহুল্লাহকে সদর মুহতামিম ও বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত মাওলানা আবু তাহের নদভী কাছেমী হাফিজাহুল্লাহকে নায়েবে মুহতামিম করায় মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সাহেবের বিশেষ সুবিধা হবে। তিনি তাঁদের অভিজ্ঞতালব্ধ পরামর্শ ও সহযোগিতা পাবেন। শুরার এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক ও সময়োপযোগী।

পটিয়া জামিয়ার মত খ্যাতিমান দ্বীনি এদারার প্রতিনিধিত্ব করার মত এ মুহূর্তে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা (হাফি.)ই একমাত্র যথোপযুক্ত ব্যক্তি। ভাষাজ্ঞান, ইলমি গভীরতা, ঋদ্ধ প্রজ্ঞা ও পরিশীলিত আচরণের পাশাপাশি রূহানি ময়দানেও তাঁর বিচরণ চোখে পড়ার মত। ইতোমধ্যে তিনি মক্কা মুকাররমায় বিশ্বখ্যাত দরবেশ সূফী শায়খ যুলফাকার নকশবন্দী হাফিজাহুল্লাহর হাতে বাইয়াত হয়ে ইসলাহে নাফসের সবক নিয়েছেন। তিনি মুরব্বীদের মসনদে বসেছেন। তিনি অবশ্যই পটিয়া মাদরাসার মুহতামিম হিসেবে দক্ষতা ও কৃতিত্বের পরিচয় দেবেন ইনশাআল্লাহ। ইংরেজিতে একটি প্রবচন আছে, Chair makes a man.

দীর্ঘ ১৬ বছর তাঁকে নিয়ে আমরা জামিয়ার মুখপত্র মাসিক 'আত-তাওহীদ' সম্পাদনার কাজ করেছি। তাঁর সহজাত বিনয়, ঠান্ডা মেজায, ও স্থিতধী আচরণ আমাদের আপ্লুত করেছে। কোন মানুষ দোষ ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। সবাই ইনসানে কামিল হতে পারে না। আমরা মানুষের বিচ্যুতি ও স্খলনকে ক্ষমার চোখে দেখবো, মার্জনা করে দেবো। গুণ, যোগ্যতা ও মননশীলতাকে কদর করবো। আমাদের অনুদারতার কারণে ড. মাহমুদুল হাসান আযহারী হাফিজাহুল্লাহকে পটিয়া জামিয়ায় ধরে রাখতে পারিনি। তিনি এখন লন্ডনে বসে সিয়েরা লিওন, কঙ্গো ও লাইবেরিয়াসহ আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা ও দাওয়াতী খিদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। তীক্ষ্ণধী ও যোগ্য মানুষের কদর দুনিয়া জোড়া।

আমাদের প্রত্যাশা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা সাহেবের ইহতিমামীর আমলে পটিয়া জামিয়া ইলমি, আমলি ও রূহানী তারাক্কি করবে। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে ইনশাআল্লাহ। তাঁর গতিশীল ও বলিষ্ট নেতৃত্বে পটিয়া জামিয়া আন্তর্জাতিক ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত হবে। হযরত মাওলানা হারুন রাহমাতুল্লাহি আলাইহিরর যামানায় থাইল্যান্ডের ছাত্ররা এখানে পড়তো। মিশরীয় শিক্ষকরা পাঠদান করতেন। মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা সাহেবের জন্য আরব বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পটিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীদের উচ্চতর পড়াশোনার জন্য Exchange Programme চালু করা কোন ব্যাপার নয়।

আমাদের আকাঙ্খা নতুন মুহতামিম সাহেব ছাত্র-শিক্ষকদের আস্থায় নিয়ে নতুন সফর শুরু করবেন এবং মাদরাসার অভিভাবক হিসেবে উদারতার পরিচয় দেবেন। ক্ষমা মহত্ত্বের লক্ষণ। আমরা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা সাহেবের সফলতা ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি এবং দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার তাওফিক দান করেন, আমিন।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, উস্তাযুল হাদিস, লেখক ও সম্পাদক